ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটার সাথে প্রেম করার ইচ্ছে বিজ্ঞান শিক্ষক ইমাদুলের। ইমাদুলের বয়স প্রায় পঁয়ত্রিশ। মেয়েটার নাম টুম্পা। তার বয়স তেইশ। ইমাদুলের সাহস হয়না যে মেয়েটার হাত ধরে বা তার সাথে একান্তে কিছু কথা বলে।কিন্তু তার খুব ইচ্ছে হয় টুম্পার কাছে তার মনের আবেগের কথা খুলে বলে, তার হাত ধরে, বা ক্লাস শেষে যখন টুম্পা বেরিয়ে যায় তখন সেও বেরিয়ে গিয়ে তার সাথে রিক্সায় ওঠে। কিন্তু স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায় আর তার এই সংকোচ এর সুজোগে ক্লাসের স্মার্ট ছেলেরা তার পিছু নেয়।এদের মধ্যে একটা ছেলে হলো টনি। দেখতে এতো বাজে যে ইমাদুলের মনে হয় যদি রাতের চেহারা কালো হয় তবে টনির চেহারা হলো কমোডের নিচের অংশের মতো।আর সবার শরীর থেকে যখন সেন্টের সুগন্ধ ভেসে আসে তখন টনির শরীর থেকে ভেসে আসে রান্নাঘরের বাসি পচা খাবারের দুর্গন্ধ। আর মুখ থেকে আসে সিগারেটের নোংরা গন্ধ। এই প্রোফাইল নিয়ে সে টুম্পার পেছনে ঘোরে।আর টুম্পাই যেন কেমন, সে টনির দিকে তাকিয়ে হাসে।সহ্য হয়না ইমাদুলের।সে চিন্তা করে কিছু টেকনিক বের করে ফেলে। একদিন ফিজিক্স ক্লাসে সে ঘর্ষ বিদ্যুত সম্পর্কে লেকচার দেবার সময় বললো,‘তোমরা কি জানো যে হাতে হাতে ঘষলে ঘর্ষ বিদ্যুত উৎপন্ন হয়?’
Monday, July 18, 2016
পহেলা বৈশাখ
ওর সাথে দেখা হয়েছিলো পহেলা বৈশাখের দিন রমনা পার্কে। দিনটাকে এখনও আমি আমার জীবনের সেরা দিন মনে করি। কয়েকজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে দুটো রিকসায় আমরা সকাল সকাল চলে গিয়েছিলাম রমনায়। উদ্দেশ্য পান্তা ইলিশ খাবো। তখন সুর্য্যমামা সবেমাত্র উঠেছে ওপরে। বাতাসে কেমন একটা ঘ্রান। রাস্তায় অনেক মানুষ। এতো সকালবেলাতেই সবাই একটা আমেজ নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে। মন খারাপ হয়ে গেল। আগেরদিন অনেক পরিকল্পনা করে ভোরবেলা রমনায় যাওয়ার জন্য আগেভাগে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেকেই আমাদের আগে আগে রমনায় পৌছে গেছে। ভোরবেলা গোসল আর শেভ সেরেছি। মুখে মেখেছি মুলতানী মাটি। কাঁচা হলুদও কিছুটা মাখা হয়েছে। পরনে লাল পাঞ্জাবী আর সাদা পায়জামা। আমাকে নিখাদ রাজপুত্রের মতো লাগছে।
Sunday, July 17, 2016
রাজপুত্তুর গজু (কপিরাইটেড ছোটগল্প)
ছোটবেলা থেকে গজুকে খুব পছন্দ করে তিথি। গজু দেখতে খুব সুন্দর। একেবারে নায়ক নায়ক চেহারা। ওর লম্বা লম্বা দুটো হাত আছে, সোজা সোজা পা, পায়ে গামবুটের মতো জুতো। মাথাজোড়া কোঁকড়া কালো চুল যা উল উল মনে হয়। আর চোখ দুটো এমন টানা টানা যে মনে হয় কোন আর্টিস্ট দামী কলম দিয়ে একেঁছে তার চোখ দুটো। তবে বাইরে থেকে দেখলে বোঝা না গেলেও কাপড়ের নিচেই রয়েছে গজুর খড়ের তৈরী শরীর। হাওয়াই চপ্পলের রবার কেটে তার ওপর উল জড়িয়ে বানানো হয়েছে হাতটা। মাথার চুলগুলোও এমন উলের তৈরী। তিথির বাবা সেই ছোট বেলায় তিথির জন্য বানিয়ে দিয়েছিলেন এই পুতুলটা। তিথি তখন এক বছর বয়সী। বাবাই তার সব। তিথির জন্মের সময় মা যখন না ফেরার দেশে চলে গেলেন তখন থেকে বাবাই তার বাবা, বাবাই তার মা। স-অ-ব। বাবার হাতে টাকা ছিলোনা তখন। চাকরি নেই। তিথি রাতদিন কাঁদতো। বাবা তাকে বোঝানোর অনেক চেষ্টা করতো। তিথি কি বোঝে? তার বয়স মাত্র এক বছর। তখন বাবা তাকে এই গজু বানিয়ে দিয়েছিলো। বাবাই দিয়েছিলো এই অদ্ভুত নাম।
তানিয়া.................................................তুহিন রহমান
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhY2Vl2wOI_XW7vZgDWAR1wseGZBooUYsoLFQ3erCSEeeW-Zbr5ZsrDhGmi3KJVnrqLRnK6OR0edGhFspEpeEzpMCfDBLUGBagdrbaiuNbCTd5u1dT6cbcpESgfdJ04-sF1KcO9pdTQ76w/s200/cartoon-woman.jpg)
আমাদের কাসের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটার নাম ছিলো তানিয়া। অবশ্য বয়স এতো কম ছিলো যে সুন্দরের তাৎপর্য বোঝা আর আকর্ষনের মাত্রা পরিমাপ করা আমার জন্য অসম্ভব ছিলো। কিন্তু একটু বয়স যখন হলো তখন আমি তো দুরের কথা কাসের সবচেয়ে ভালো ছেলেটাও ওর জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলো। ফলে আমার মতো হাবাগোবা ছেলেটার পে তানিয়ার কাছে যাওয়া বেশ দুস্কর ছিলো।
কিন্তু মনেপ্রানে আমি তানিয়ার কাছে যাবার চেষ্টা করে যেতাম। যখন কাস ফাইভে উঠলাম তানিয়ার সেই সময়ের চেহারার কথা বেশ মনে আছে কারন সে তখন তার সৌন্দর্যের শিখরে অবস্থান নিয়েছে। আমার মনে হয় তখনই সে সবচেয়ে সুন্দরী হয়ে উঠেছিলো। হে মানবী আমি তো কেবল তোমার কাছে যাবার প্রার্থনা করি কায়মনোবাক্যে। তুমি কি আমার কথা শুনতে পাও?
Saturday, July 16, 2016
দিগন্তের একজন
যে বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম সে বছর অনেক গরম পড়েছিলো। প্রচন্ড গরমে ক্লাস করতেও ইচ্ছে করতোনা। আমাদের বাড়িতে সার্বক্ষনিক এসি চলে কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে এসির কথা তো ভাবাই যায়না। স্বাভাবিকভাবে দুপুরের দিকে গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে যখন ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আসতাম টিএসসির বিশাল বিশাল গাছগুলোর নিচে দাঁড়িয়ে একটু শীতল হবার চেষ্টা করতাম সবাই মিলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী ডিপার্টমেন্টের দিকে সবারই একটু বেশী নজর থাকে।
সেই কারনেই আমাদের ব্যাচে প্রচুর ছাত্রছাত্রী এবারও ভর্তি হলো। এমন অবস্থা যে বেঞ্চে বসার জায়গাও নেই। ক্লাসে সবাই আন্তরিক। ছেলে মেয়ে কোন ভেদাভেদ নেই। ফার্স্ট ইয়ারে যা ক্লাস হয় তার চেয়ে বন্ধুত্ব হয় বেশী।
সেই কারনেই আমাদের ব্যাচে প্রচুর ছাত্রছাত্রী এবারও ভর্তি হলো। এমন অবস্থা যে বেঞ্চে বসার জায়গাও নেই। ক্লাসে সবাই আন্তরিক। ছেলে মেয়ে কোন ভেদাভেদ নেই। ফার্স্ট ইয়ারে যা ক্লাস হয় তার চেয়ে বন্ধুত্ব হয় বেশী।
সবার সাথে পরিচয় করতে করতেই দিন যায়। তিন মাস যেতে না যেতে সবার সাথে এমন বন্ধুত্ব হয়ে যায় যে মনে হয় এরা আমার কতো দিনেরই না চেনা। আমি যে একটা মেয়ে এটা আমার প্রায়ই মনে থাকেনা। কেবল আয়নায় দাঁড়ানোর পরই এটা মনে আসে আমার। আমার মা প্রায়ই হাসতে হাসতে বলেন, আমার মেয়েটা এতো সুন্দরী যে ওর জন্য পাত্র দেখাও লাগবেনা। আমার মেয়ের জন্য একটা রাজপুত্র জোগাড় হয়ে যাবে। আমি হেসে বলতাম, কিযে বলোনা মা, এখনই এসব কথা ভাবো তুমি!